ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,জামালপুর: ভরা দামদরে স্নান করতে নেমে জলের তোরে ভেসে গেলেন এক বৃদ্ধা। মৃত্যু অবধারিত জেনেও স্রোতে ভাসতে ভাসতে প্রায় ২৪ কিলোমিটার চলে যাবার পর আচমকাই নদীর পাড়ে কিছু মানুষ ওই বৃদ্ধাকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করলেন। লোমহর্ষক এই ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার বিকেলে জামালপুর থানার মুইদিপুর গ্রাম সংলগ্ন দামোদর নদে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে বৃদ্ধার নাম মাতুরি টুডু। বয়স আনুমানিক ৭০ বছর। বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের রায়নার হিজলনার জাকতা গ্রামে।

উদ্ধারের পর বৃদ্ধাকে তড়িঘড়ি জামালপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। পাশাপাশি বৃদ্ধার বাড়ির লোককে খবর দিয়েছে পুলিশ। পরিবারের লোকজন হাসপাতালে পৌঁছেছে। জানা গেছে, দফায় দফায় ডিভিসি থেকে জল ছাড়ায় দামোদরের জলস্তর হঠাৎ অনেক বেড়ে গেছে। তার সাথে নাগারে চলছে নিম্নচাপের বৃষ্টি। রবিবার সন্ধ্যায় এই ভরা দামোদরে বেগোর মোড়ে যেখানে দামোদর নদ দুদিকে ভাগ হয়ে গিয়ে দামোদর ও মুন্ডেশ্বরি নদী হয়ে যাচ্ছে, ঠিক সেই জায়গার কাছে (মুইদিপুর গ্রাম) হঠাৎ গ্রামবাসীরা বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার শুনতে পান।
সাথে সাথেই গ্রামের লোকেরা ছুটে যান নদীর পাড়ে। খবর পেয়েই সেখানে ছুটে আসেন জোতশ্রীরাম অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তপন দে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সকলে মিলে তদারকি করে বৃদ্ধাকে নদীর পাড়ে তুলে আনেন তাঁরা। দীর্ঘক্ষণ জলে থাকার কারণে বৃদ্ধার শরীর ঠান্ডায় কাঁপতে থাকে। দ্রুত তাঁকে নতুন পোশাক পরানোর ব্যবস্থা করেন এলাকার মহিলারা। খবর পেয়েই জামালপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মেহেমুদ খাঁন পুলিশকে খবর দেন।
পুলিশ সেই বৃদ্ধাকে জামালপুর হাসপাতালে নিয়ে আসে। মাতুরি দেবী বলেন, ‘তিনি দুপুরে দামোদরে স্নান করতে নেমেছিলেন, জল বেশি থাকায় স্রোতে ভেসে যান। তারপর আর কিছুই করার ছিল না।’ জামালপুর থানার পুলিশ বৃদ্ধার বাড়ির লোকের সাথে যোগাযোগ করেছে। তাঁকে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। মেহেমুদ খাঁন বলেন, ‘বৃদ্ধাকে জামালপুর হাসপাতালে নিয়ে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা করা হচ্ছে। তাঁর পরিচয় ও ঠিকানা জানতে পেরেছে পুলিশ। হিজলনার জাকতা গ্রামে তাঁর বাড়ি। স্নান করতে নেমে জলের স্রোতে তিনি ভেসে গিয়েছিলেন। স্থানীয় মানুষ দারুন সুন্দরভাবে মানবিকতার কাজ করেছেন। পুলিশ প্রশাসন অবশ্যই তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।’









