ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ঘোর বর্ষাতে দামোদর নদ থেকে বালি চুরির বিরাম নেই। নদীতে জল থাকায় বালি চুরি করতে গিয়ে দুষ্কৃতীরা খোদ নদীর পাড় কেটেই হওয়া করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ। বর্ধমান থানার অন্তর্গত চরমানা এলাকা থেকে শুরু করে ধরমপুর, কুমারপুর, বেলকাশ সহ গলসি থানার অন্তর্গত জুজুটি পর্যন্ত চলছে নদীর পাড় কেটে বালি চুরি। ফলে প্রতিদিন জলের ধাক্কায় ভাঙনের পরিমাণ বাড়ছে। নদী গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে ডাঙ্গা। লুট হচ্ছে সরকারি রাজস্ব। তবু পুলিশ বা প্রশাসনের নাকি নজরেই নেই এই অনিয়ম! স্বাভাবিকভাবেই চিন্তায় পরিবেশবিদ থেকে নদী তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারীরা।


দিনের পর দিন রাতের অন্ধকারে নদীর নিচ থেকে পাড় লাগোয়া অংশ বেলচা দিয়ে কেটে সেখান থেকে বালি চুরি করে উপরে এক জায়গায় মজুদ করছে দুষ্কৃতীরা। পরে সেই বালি ট্রাক্টরে করে কখনও জোড়াবাঁধ দিয়ে উদয়পল্লি, কাঞ্চননগর, রথতলা হয়ে, আবার কখনও নলা গ্রামের ভিতর দিয়ে সোজা জাতীয় সড়কে উঠে পাচার করে দিচ্ছে মাফিয়ারা। স্থানীয় গ্রামবাসীদের একাংশের আরও অভিযোগ, বর্ধমান পুরসভা এলাকায় পরিস্রুত পানিও জল সরবরাহের জন্য আম্রুত প্রকল্পের জল যেখান থেকে আসছে, অর্থাৎ বেলকাশ ও জুজুটির কাছে পরিত্যক্ত রেল ব্রিজের নিচ থেকেও বালি মাফিয়ারা দেদার বালি কেটে ফাঁক করে দিচ্ছে।

ফলে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে জল প্রকল্পের ভবিষ্যত নিয়েই প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে। আগেও এই এলাকায় বালি চুরির অভিযোগ জানিয়েছিলেন খোদ বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার। প্রশাসনিক পর্যায়ে অভিযানও চালানো হয়েছিল সেই সময়। কিন্তু তারপরেও চুরি বন্ধ হয়নি কোনো অজ্ঞাত কারণে। পরেশচন্দ্র সরকার কে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ” অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই এলাকায় নজরদারি চালানো হবে।”
এদিকে প্রতিদিন কোনো বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই রাত থেকে ভোর পর্যন্ত বালি বোঝাই ট্রাক্টর খোদ উদয়পল্লী, কাঞ্চননগর, রথতলা হয়ে বিধায়কের বাড়ির সামনে দিয়ে যাতায়াত করলেও এই অবৈধ কারবার বন্ধের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়না বলেই অভিযোগ। অন্যদিকে স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, বর্ধমান থানার রাত্রিকালীন নজরদারি ভ্যান বা এলাকায় সিভিক ভলেন্টিয়ার মোতায়েন থাকলেও এই বালি চুরি চক্রের দাপাদাপি বন্ধ হয়না অজ্ঞাত কারণে। যদিও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বেশ কয়েকটি বালি বোঝাই ট্রাক্টর আটক করা হয়েছে অবৈধ ভাবে বালি নিয়ে যাওয়ার কারণে। অভিযোগ, এই বালি চুরি চক্রের সঙ্গে জড়িতরা বেশিরভাগই উদয়পল্লি, রথতলা, কাঞ্চননগর, জোড়াবাঁধ সহ ধরমপুর, কুমারপুর, বেলকাশ এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয়দের একাংশের সন্দেহ, রীতিমত সেটিং করেই চলছে এই বালি চুরি চক্র।









