ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: সাপ দেখলেই ভয়ে শরীর ঠান্ডা হয়ে যায় অনেকেরই। তার ওপর সেই সাপ যদি হয় বিষধর কেউটে – তবে তো কথাই নেই। তবে পূর্ব বর্ধমানের ভাতার ও মঙ্গলকোটের কয়েকটি গ্রামে সেই বিষধরদের সঙ্গে সহাবস্থান বাসিন্দাদের। ওঠাবসা সবই সাপের সঙ্গে। এই গ্রামগুলিতে সাপকে পুজো করা হয় দেবী রূপে। আষাঢ় মাসের শুক্লা প্রতিপদ তিথিতে জ্যান্ত বিষধর সাপকে দেবীজ্ঞানে যুগ যুগ ধরে পুজো করে আসছেন গ্রামবাসীরা।

চিরাচরিত প্রথা মেনে মহাধুমধামে শুক্রবার ঝাঁকলাইয়ের পুজো হল ভাতাড়ের বড়পোশলা, শিকোত্তর, মুকুন্দপুর এবং মঙ্গলকোটের ছোট পোশলা, পলসোনা, মুশারু এবং নিগন গ্রামে। আগে এই সাত গ্রামে ঝাঁকলাইয়ের অবাধ বিচরণ থাকলেও বর্তমানে ভাতারের বড়পোশলা এবং মঙ্গলকোটের ছোটপোশলা,মুশারু ও পলসোনা গ্রামে এখনও ঝাঁকলাইয়ের দর্শন মেলে। বাড়ির উঠোনে, শোবার ঘরে রান্নার ঘরে, অবাধ বিচরণ ঝাঁকলাইয়ের । গ্ৰামবাসীরা জ্যান্ত কেউটে প্রজাতির বিষধর সাপকেই দেবীজ্ঞানে পুজো করেন।
এলাকাবাসীদের বিশ্বাস, ঝাঁকলাই কাউকে কামড়ায় না। কাউকে ছোবল দিলেও দেবীর মন্দিরের মাটি শরীরে লেপে দিলেই বিষমুক্ত হয়ে যান। এই বিশ্বাস নিয়েই আজও ঝাঁকলাইয়ের সঙ্গে ঘর করেন ভাতার ও মঙ্গলকোটের চারটি গ্রামের বাসিন্দারা। গ্ৰামবাসীদের বিশ্বাস ’ঝাঁকলাই’ আসলে কালনাগিনী। লক্ষ্মীন্দরকে লোহার বাসরঘরে দংশন করার পর পালানোর সময় বেহুলা তাঁকে লক্ষ্য করে ’কাজললতা’ ছুড়ে মারেন। ’কাজললতার’ আঘাতে কালনাগিনীর ’লেজ’ কেটে যায়। তাই ঝাঁকলাইয়ের ’লেজ’ কাটা।
শোনা যায়, পলসোনা গ্রামের বাসিন্দা মুরারীমোহন চক্রবর্তীকে স্বপ্নাদেশে কালনাগিনী তাঁর পুজো করার কথা জানায়। সেই থেকেই পলসোনা গ্রামে ঝাঁকলাইয়ের পুজো হয়ে আসছে। ঝাঁকলাইয়ের গায়ের রং কালচে বাদামি। যেসব গ্রামে ঝাঁকলাই সাপ দেখা যায় সেইসব গ্রামে সচরাচর অন্য কোনও বিষধর সাপ দেখা যায় না। ঝাঁকলাই রাতে বের হয় না।এমনকি এই সাপ এলাকা ছেড়েও বাইরে যায় না।









